বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা:মঙ্গলবারই বাংলার কোন জেলায় কত ধর্ষণ ও অপহরণের ঘটনা ঘটেছে, তা তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে টুইট করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। জবাবে রাজ্যপাল ভ্রান্ত ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন বলে রাজ্য সরকারের তরফে পাল্টা টুইট করেছিল স্বরাষ্ট্র দফতর। শুধু তাই নয়, ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ খুলেছিলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শুধু এই ঘটনাই নয়, এর আগেও রাজ্যপাল আইন–শৃঙ্খলার প্রশ্নে অনেকবারই রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন কখনও, আবার কখনও জবাব চেয়েছেন। রাজ্য সরকারের তরফে কয়েকবার পত্রাঘাত করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র, সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, নুসরত জাহান চাঁছাছোলা ভাষায় রাজ্যপালের সমালোচনা করেছেন। তিনি বিজেপির হয়ে কাজ করছেন বলেও কটাক্ষ করেছেন তাঁরা।
এবার সরাসরি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের হয়ে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। বুধবার রীতিমতো কড়া ভাষায় তৃণমূল নেতা ও নেত্রীদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘রাজ্যপালের সমালোচনা করার আগে দু’বার ভাবুন। মনে রাখবেন, রাজ্যপাল হিসেবে জগদীপ ধনকড় রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তিনি একজন বলিষ্ঠ মানুষ। আবার বিখ্যাত আইনজীবীও। তাই তিনি এমন কোনও কথা বলেন না, যা অসাংবিধানিক। সুতরাং, তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলার আগে বারবার সে কথা ভেবে দেখবেন।’ শুধু তাই নয়, তৃণমূল নেতা ও নেত্রীদের তিনি এ কথাও মনে করিয়ে দেন, ‘রাজ্যপাল হিসেবে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতেই পারেন। সংবিধানই তাঁকে সেই অধিকার দিয়েছে। আর সংবিধানেই আছে, সেই প্রশ্নের উত্তর মুখ্যমন্ত্রীকে দিতে হবে। তাই আপনারা চেষ্টা করুন সংবিধানের নির্দেশ মেনে চলতে।’
এদিন বিকেলে আসানসোলের ২ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া কাল্লা মোড়ে জেলা বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বাবুল সুপ্রিয় রাজ্য সরকার ও শাসক দলকে আক্রমণ করে বলেন, ‘আমি এই রাজ্যের শাসক দলের নেতা ও নেত্রীদের সাবধান করে দিচ্ছি, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের বিরুদ্ধে কথা বলার আগে ভেবেচিন্তে কথা বলবেন। তিনি যথেষ্ট সম্মান ও কৃতিত্বের সঙ্গে আইনের কাজ করেছেন। তাই কোনটা আইনসম্মত, আর কোনটা আইন বিরুদ্ধ, তা তাঁর ভালো করেই জানা আছে। বরং ক্ষমতার দম্ভে এই রাজ্যের শাসক দলের নেতা ও নেত্রীরাই সেই জ্ঞান হারিয়ে বসে রয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘দিনের পর দিন রাজ্যের মানুষের ওপর অত্যাচার চলতে থাকবে, আর রাজ্যপাল হাত–পা গুটিয়ে রাজভবনে বসে থাকবেন, তা হতে পারে না। আবারও বলছি, তিনি এক মিনিটও চুপ করে বসে থাকবেন না। আপনাদের যদি কিছু করার ক্ষমতা থাকে, তা হলে করে দেখান।’